মানুষের মস্তিষ্ক যেভাবে কাজ করে এবং মানব শরীরের নিউরনের মাধ্যমে যেভাবে জৈব সংকেত পরিবাহিত হয় তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাসায়নিক কম্পিউটার তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় আগামী তিন বছর যাবত্ এ প্রকল্পের কাজ চলবে।
রাসায়নিক এই কম্পিউটারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ওয়েট কম্পিউটার’। মানব শরীরে যে ধরনের কোষ ও কোষ প্রাচীর থাকে, কৃত্রিমভাবে তৈরি সে ধরনের কোষ ও কোষ প্রাচীরের সমন্বয়ে তৈরি হবে ওয়েট কম্পিউটার। এই কম্পিউটারের এক কোষ থেকে আরেক কোষে সরাসরি ইলেকট্রনিক সংকেতের পরিবর্তে রাসায়নিক সংকেত পরিবাহিত হবে। সংকেতের গতিপথ এবং প্রকৃতিও নির্ধারিত হবে রাসায়নিক মিথস্ক্রিয়ার ফলে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো প্রচলিত ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া নয়, বরং যেসব ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের কার্যকারিতার মাত্রা অপেক্ষাকৃত কম যেমন—মানব শরীরের অভ্যন্তর ভাগে জটিল অস্ত্রোপচার ও ওষুধ প্রয়োগ, জৈব ন্যানো রোবট তৈরি, ন্যানো প্রকৌশল ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাসায়নিক কম্পিউটার ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের যথার্থ সহযোগী হবে। নিবিড় প্রচেষ্টায় কোনো একদিন মানব মস্তিষ্কের মতো বিপুল ক্ষমতা ও সূক্ষ্ম বিশ্লেষণী শক্তিসংবলিত রাসায়নিক কম্পিউটার তৈরি করা গেলে মহাবিশ্বের অনেক অমীমাংসিত রহস্যই উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে বলে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন।
No comments:
Post a Comment